SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

পদার্থবিদ্যা - পদার্থবিজ্ঞান – ১ম পত্র - শিশিরাঙ্ক

নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। তাপমাত্রা বাড়লে ঐ স্থানের জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। যখন কোনো স্থানে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ পরিমাণ জলীয়বাষ্প থাকে, তখন ঐ স্থানকে জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত বলা হয়। বায়ু জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হলে ঐ বায়ু আর জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে না, তখন জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশিরে পরিণত হয়।

কোনো স্থানের তাপমাত্রা কমলে ঐ স্থানের জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। তাপমাত্রা ক্রমশ কমতে থাকলে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বায়ুমণ্ডল ঐ স্থানের জলীয়বাষ্প দ্বারাই সম্পৃক্ত হয়। ঐ তাপমাত্রায় বায়ুতে অবস্থিত জলীয়বাষ্প তখন শিশিরে পরিণত হয়। এ তাপমাত্রাই শিশিরাঙ্ক।

সংজ্ঞা : যে তাপমাত্রায় কোনো নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ু এর মধ্যে অবস্থিত জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়, সেই তাপমাত্রাকে শিশিরাঙ্ক বলে।

কোনো স্থানের তাপমাত্রা 30°C এবং শিশিরাঙ্ক 22°C বলতে বোঝা যায় ঐ স্থানে 30°C তাপমাত্রায় যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প আছে তা দ্বারা ঐ স্থানের বায়ু অসম্পৃক্ত কিন্তু তাপমাত্রা কমিয়ে 22°C করা হলে ঐ জলীয়বাষ্প দ্বারাই ঐ স্থানের বায়ু সম্পৃক্ত হয়।

কোনো স্থানের জলীয়বাষ্পের চাপ ঐ স্থানের জলীয়বাষ্পের পরিমাণের উপর নির্ভর করে। জলীয়বাষ্পের পরিমাণ যত বেশি হবে তার চাপও তত বেশি হবে। কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো স্থানের অসম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ এবং শিশিরাঙ্কে ঐ স্থানের সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ সমান হবে (কারণ একই পরিমাণ জলীয়বাষ্প দ্বারা শিশিরাক্ষে ঐ স্থানের বায়ু সম্পৃক্ত হয়)।

 

আপেক্ষিক আর্দ্রতা (Relative humidity) :

  আবহাওয়া বিজ্ঞানে বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের পরিমাণের চেয়ে বায়ুমণ্ডলের সম্পৃক্ততার মাত্রা অর্থাৎ বায়ুমণ্ডল কতখানি শুষ্ক বা ভেজা তা বেশি প্রয়োজন হয়। আপেক্ষিক আর্দ্রতা দিয়ে তাই বোঝানো হয়।

সংজ্ঞা : কোনো তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের ভর এবং ঐ একই তাপমাত্রায় ঐ আয়তনের বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় জলীয়বাষ্পের ভরের অনুপাতকে ঐ স্থানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা বলে।

 

:- আপেক্ষিক আর্দ্রতা =বায়ুর তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের ভর/বায়ুর তাপমাত্রায় ঐ বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় জলীয়বাষ্পের ভর

কিন্তু নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো স্থানের জলীয়বাষ্পের চাপ ঐ স্থানের জলীয়বাষ্পের ভরের সমানুপাতিক।

:- আ: আর্দ্রতা= বায়ুর তাপমাত্রায় ঐ স্থানে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের চাপ/বায়ুর তাপমাত্রায় ঐ স্থানকে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় জলীয়বাষ্পের চাপ

কিন্তু কোনো তাপমাত্রায় কোনো স্থানে জলীয়বাষ্পের চাপ ঐ স্থানে শিশিরাঙ্কে সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপের সমান ।

:-আপেক্ষিক আর্দ্রতা = শিশিরান্ধে সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ/বায়ুর তাপমাত্রায় সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ

আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে R, শিশিরাঙ্কে সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপকে f, বায়ুর তাপমাত্রায় সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপকে F দিয়ে প্রকাশ করলে, R=fF

আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে সাধারণত শতকরা হিসাবে প্রকাশ করা হয়।

R=fF×100%

তাৎপর্য : কোনো স্থানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা 60% বলতে বোঝা যায়, বায়ুর তাপমাত্রায় ঐ স্থানকে সম্পৃক্ত করতে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্পের প্রয়োজন তার শতকরা 60 ভাগ জলীয়বাষ্প ঐ স্থানের বায়ুতে আছে। বিভিন্ন তাপমাত্রায় সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ কত রেনো (Regnaults) পরীক্ষার সাহায্যে সেগুলো নির্ণয় করে একটি তালিকা তৈরি করেছেন। নিম্নে সেই তালিকা প্রদান করা হলো :

সারণি-১০.১: বিভিন্ন তাপমাত্রায় সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ (রেনোর তালিকা)

 

Content added || updated By

কোনো স্থানের কোনো সময়ের আর্দ্রতা পরিমাপের জন্য যে যন্ত্র ব্যবহৃত হয় তাকে আর্দ্রতামাপক যন্ত্র বা হাইগ্রোমিটার বলে। আর্দ্রতামাপক যন্ত্রের কার্যপ্রণালির উপর ভিত্তি করে এদের চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়; যথা :

১। সিক্ত ও শুষ্ক বালব আর্দ্রতামাপক যন্ত্র (Wet and dry bulb hygrometer),

২। শিশিরাঙ্ক আর্দ্রতামাপক যন্ত্র (Dewpoint hygrometer),

 ৩। রাসায়নিক আর্দ্রতামাপক যন্ত্র (Chemical hygrometer) এবং

৪। কেশ আর্দ্রতামাপক যন্ত্র (Hair hygrometer)।

সিক্ত ও শুষ্ক বাল্‌ব আর্দ্রতামাপক যন্ত্র বা মেসনের আর্দ্রতামাপক যন্ত্র

যন্ত্রের বর্ণনা এ যন্ত্রে একই রকম দুটি পারদ থার্মোমিটার আছে যেগুলো পাশাপাশি উল্লম্বভাবে একটি কাঠের ফ্রেমের সাথে লাগানো থাকে। একটি থার্মোমিটার বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা প্রদান করে, অন্যটির বালবে মসলিনের বা লিনেনের সলতে জড়ানো থাকে এবং এ সলতে একটি পাত্রে রাখা পানির মধ্যে ডুবানো থাকে। পানি মসলিন বা লিনেন বেয়ে উপরে ওঠে এবং থার্মোমিটারের বাল্‌বকে সব সময় ভিজা রাখে (চিত্র : ১০.১২)।

চিত্র :১০১২

মসলিন বা লিনেন থেকে পানি বাষ্পায়িত হয় ফলে সিক্ত বাল্‌ব থার্মোমিটার শুষ্ক বালব থার্মোমিটারের চেয়ে কম তাপমাত্রা নির্দেশ করে। এ দু তাপমাত্রার পার্থক্য বায়ুমণ্ডলের আপেক্ষিক আর্দ্রতার উপর নির্ভর করে। বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতা কম হলে বাষ্পায়ন দ্রুত হয়, ফলে দু তাপমাত্রার পার্থক্য বেশি হয়, অপরপক্ষে আর্দ্রতা বেশি হলে তাপমাত্রার পার্থক্য কম হয়। আর যদি বায়ুমণ্ডল জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়, তবে কোনো বাষ্পায়ন হয় না ফলে উভয় থার্মোমিটারের পাঠ একই হয়।

পরীক্ষা : যে স্থানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা নির্ণয় করতে হবে সেই স্থানে যন্ত্রটিকে রেখে এর থার্মোমিটার দুটির পাঠ নেয়া হয়। এরপর গ্রেসিয়ারের উৎপাদকের সাহায্যে শিশিরাঙ্ক বের করে আপেক্ষিক আর্দ্রতা নির্ণয় করা হয়। মনে করা যাক, শুষ্ক ও সিক্ত বাল্‌ব থার্মোমিটারে নির্দেশিত তাপমাত্রা যথাক্রমে θ1 ও θ2 এবং ঐ সময়ের শিশিরাঙ্ক  θ । তাহলে গ্লেসিয়ারের সূত্রানুসারে,

θ1-θ=G(θ1-θ2)

এ সমীকরণ থেকে শিশিরাঙ্ক নির্ণয় করা যায়, এখানে G হচ্ছে B°C তাপমাত্রায় গ্লেসিয়ারের উৎপাদক (সারণি ১০.২ দ্রষ্টব্য)। শিশিরাঙ্ক পাওয়া গেলে রেনোর তালিকা থেকে শিশিরাঙ্কে (θ) সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ, বায়ুর তাপমাত্রায় (f) সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ F নির্ণয় করে আপেক্ষিক আর্দ্রতা নির্ণয় করা যায়।

সুতরাং, R=fF×100%

সতর্কতা

১। সুবেদী থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়।

২। থার্মোমিটার দুটির পারদস্তম্ভ স্থির অবস্থানে এলে পাঠ নেয়া হয়।

৩। মসলিন বা লিনেনের সলতে যাতে থার্মোমিটারের বালবকে আবৃত রাখে সে দিকে লক্ষ রাখা হয়।

৪। সলতের নিচের প্রান্ত যাতে পাত্রের পানিতে ডুবে থাকে সে দিকে লক্ষ রাখা হয়।

 

Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.